রহিত বেমুলার আত্ম বলিদানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
কবিতাটিতে ভাষ্য দিয়েছেন - পবিত্র বিশ্বাস।
কবিতাটিতে ভাষ্য দিয়েছেন - পবিত্র বিশ্বাস।
কবিতাটিতে ভাষ্য দিয়েছেন - পবিত্র বিশ্বাস।
আমি রহিত বলছি
জগদীশচন্দ্র রায়(মুম্বাই)
Email
ID-roy.1472@g,ail.com
M-09969368536
আমি রহিত বলছি
হ্যা, আমি রহিত বলছি।
প্রকৃতির নিয়মে আমার শরীরের মৃত্যু হয়েছে।
কিন্তু এর পূর্বে তো আমার বেঁচে থাকার অধিকারের
মৃত্যু হয়েছ।
তাই এই মৃত্যুটা ভীষণ জরুরি ছিল।
আমার এই মৃত্যু, তোমাদের জাগানোর জন্য।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য।
আজ আমি তোমাদের মনে যে, অধিকারের অগুন জালাতে
পেরেছি,
সে আগুনকে নিরন্তর জালিয়ে রাখতে পারবে তো?
পারবে কি এই বর্ণ বৈষম্যতাকে ধ্বংস করে দিতে?
তার জন্য তোমাদের আজই প্রতিজ্ঞা নিতে হবে।
হ্যা, আমি রহিত বলছি।
তোমাদের আর কবে ঘুম ভাঙ্গবে?
আর কতদিন পিষবে ব্রাহ্মণ্যবাদের জাঁতা কলে?
তোমাদের ঘুম ভাঙাতেই
আমার শরীরটাকে চিরতরে ঘুম পাড়াতে হ’ল।
এই মৃত্যু, শুধু এক রহিতের মৃত্যু নয়।
এ মৃত্যু শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে
অগ্নি শিখা প্রজ্বলনের বারুদ।
হ্যা, আমি রহিত বলছি।
তোমরা কি পারবে সমস্ত বিভেদকে ছিড়ে-খুঁড়ে ফেলতে?
শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে দাবানল হয়ে জলতে?
পারবে কি সঠিক নেতৃত্বের নির্মাণ করতে?
যদি পার, সে দিন হাজার রহিত গাইবে ঘুম ভাঙানোর গান।
সেদিন হাজার রহিত খুলে দেবে ঊষার দুয়ার।
পরিবর্তন আনবে এক নিকষ কালো রাত্রির।
_______________
আমি রহিত বলছি (২)
হ্যা, আমি রহিত বলছি।
তোমরাতো জানো,
এই ব্রাহ্মণ্যবাদই আমাদের হাজার বছর ধরে শিক্ষার
অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিল।
আমাদের সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ছিল।
আর বঞ্চিত করেছিলে অস্ত্রের অধিকার থেকে।
কিন্তু সেই বঞ্চনার বিরুদ্ধে কুঠারাঘাত করলেন বুদ্ধ,
আম্বেদকর।
তাঁরা আমাদের শেখালেন,
অধিকার কেউ কাউকে দেয়না, অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে হয়।
অধিকেরর জন্য বলিদান দিতে হয়।
আজ আমিও সেই অধিকারের জন্য জীবনকে উৎসর্গ করেছি।
হ্যা, আমি রহিত বলছি।
একবার চোখ খুলে দেখ,
এখনও ব্রাহ্মণ্যবাদের ভাইরাস
দেশ সমাজ ও জাতিকে প্রগতির বিরুদ্ধে হয়ে উঠেছে
প্রতিবন্ধক।
তারা কখনও চায়না তোমরা সত্যিকারের মানুষ হও।
তোমরা তোমাদের ন্যাজ্য অধিকার পাও।
তাই বন্ধু আর দেরী নয়।
ওঠো, জাগো, তুলে নেও বিজ্ঞান ও যুক্তির হাতিয়ার।
ভেঙে ফেলে দাও ওই ব্রাহ্মণ্যবাদের প্রাচীর।
ঘরে ঘরে পৌঁছে দাও শিক্ষা ও সাম্যের আলো।
হ্যা, আমি রহিত বলছি।
একটা কথা তোমরা কিন্তু মনে রেখো।
ওরা কিন্তু তোমাদের অধিকারকে বন্ধ করার জন্য আরও
নির্দয়ী হবে।
তোমাদের প্রগতির সকল রাস্তাকে ওরা রুদ্ধ করে
দেবে।
বদনাম আর অপপ্রচারে জনগণকে করবে বিভ্রান্ত।
ওরা শুধু
মুখেই বলবে তোমাদের জন্য সাম্যের কথা।
কিন্তু পিছন ফিরে চেয়ে দেখ, ইতিহাস কি বলছে?
না, ওরা কোনদিন তোমাদের অধিকার দেয়নি।
ওরা একলব্যের আঙ্গুল কেঁটে গুরুকে করেছে গরিষ্ঠ।
ওরা চুনি কোটালকে মেরেছে, আর আজ আমাকেও মারল।
আর আগামীকালও কিন্তু তোমাদের ছেড়ে দেবেনা।
তাই ওদের কথায় ভুলে গিয়ে
তোমাদের লড়াইকে থামিয়ে রেখোনা।
হ্যা, আমি রহিত বলছি।
একথা শুধু আমার মুখের কথা নয়।
এটা আমার গভীর উপলব্ধির আত্ম প্রকাশ।
ওরা আজ শিক্ষার অধিকারকে বন্ধ করতে না পেরে,
শিক্ষা ব্যবস্থাটাকেই করেছে হাতিয়ার।
আগামীদিনের শিশুর সামনে তুলে ধরছে
ব্রাহ্মণ্যবাদের পঠন-পাঠন।
মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করচে, অলৌকিকতার
ধুম্রজাল।
তোমাদের গড়ে তুলছে মেরুদন্ডহীনতায়,
তাই আর নয় বন্ধ, জীবনকে করো পণ।
ব্রাহ্মণ্যবাদের গোলামী থেকে মুক্ত হ’তে গড়ে তোল
আন্দোলন।
_____________________
রহিত বেমুলার আত্ম বলিদানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।কবিতাটিতে ভাষ্য দিয়েছেন - পবিত্র বিশ্বাস।
রহিত ভেমুলা OBC. SC na.
ReplyDelete