Pages

Thursday 19 December 2013



বাংলা বিভাগ ও নেপথ্য ইতিহাস 
তথ্য সূত্রঃ শ্রদ্ধেয় জগদীশ চন্দ্র মণ্ডল, কোলকাতা-৭০০১৫২

"১৯৩৭ সালের সাধারণ নির্বাচনের পরে যখন কংগ্রেস দল বাংলা সহ সকল প্রদেশেই মন্ত্রী সভা গঠনে অস্বীকৃত হইলেন তখন বাংলার দ্বিতীয় সংখ্যা গরিষ্ঠ " কৃষক প্রজা " দলের নেতা মৌলভী এ কে ফজলুল হক তৃতীয় সংখ্যা গরিষ্ঠ লীগ দলের নেতা খাজা স্যার নাজিমুদ্দিনের সহিত কোয়ালিশন মন্ত্রীসভা গঠন করেন। ইহার এক বছর পরেই মৌলভী এ কে ফজলুল হক লীগ দলে যোগদান করেন এবং বাংলার মন্ত্রীসভা কার্যত লীগ মন্ত্রীসভায় পরিণত হয়। ১৯৪০ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া লীগের সাধারণ কনফারেন্সে বাংলার লীগের প্রতিনিধিগ ণ ফজলুল হক সাহেবের নেতৃত্বে পত্রপুষ্পে শোভিত একখানি স্পেসাল ট্রেনে লাহোর গমন করেন। লাহোরের লীগ কাউন্সিল অধিবেশনে পাকিস্তান প্রস্তাব রূপে যে প্রস্তাব গৃহীত হয় সেই প্রস্তাবটি বাংলার ফজলুল হক সাহেবই উত্থাপন করেন। সম্মেলন অন্তে অনুরূপ সজ্জিত স্পেশাল ট্রেনে "শেরে বাঙ্গাল জিন্দাবাদ" ধ্বনি দ্বারা অভি নন্দিত হইয়া হক সাহেব বাংলায় প্রত্যাবর্তন করেন। তখন তিনি বাংলার প্রধান মন্ত্রী। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় এই যে, পাকিস্তান প্রস্তাবের প্রস্তাবক হ ওয়া সত্বেও বাংলাদেশে হক সাহেবের বিরুদ্ধে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা দিল না। তাঁহার মন্ত্রীসভায় যে সব হিন্দু মন্ত্রীগণ ছিলেন - যথা নলিনী রঞ্জন স্রকার, স্যার বিজয় প্রাসাদ সিংহ রায়, কাসিম বাজারের মহারাজা শ্রীশচন্দ্র নন্দী, প্রসন্ন দেব রায়কত এবং মুকুন্দ বিহারী মল্লিক,তাহেদের কেহই পদত্যাগ করিলেন না। কোথা হইতেও কোনরূপ প্রতিবাদ ধ্বনিত হইল না।“ আমার দু-চারটি কথা, শ্রী যো গেন্দ্রনাথ মণ্ডল...।

এর পর আমরা জানি যে, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির সহযোগিতায় হক সাহেব দ্বিতীয়বার মন্ত্রীসভা গঠন করেন। কিন্তু বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবে সেই মন্ত্রীসভাও ভেঙে যায়। তপশীল জাতির অধিকংশ এম এল এ দের নিয়ে মহাপ্রান যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল এই অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন করেন। এই অনাস্থা প্রস্তাবের পর যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল দাবী করেন যে যারা তাদের দাবী মেনে নেবেন তাদেরকেই তাঁরা সমর্থন জানাবেন।
এই দাবীগুলি হল ঃ
১) তপশীল এম এল এ দের মধ্যে ৩ জন মন্ত্রী ও ৩ জন পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি নিযুক্ত করতে হবে।
২) তপশীল জাতির শিক্ষার জন্য প্রতিবছর ৫ ল ক্ষ টাকা বরাদ্দ করতে হবে।
৩) সরকারী চাকরীতে জাতির ভাগিদারী পুরোপুরি মেনে নিতে হবে এবং
৪) উচ্চ পদের সরকারি চাকরিতে তপশীল জাতির প্রার্থী গ্রহণ করতে হবে।
হক সাহেব এই দাবী গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন । নাজিমুদ্দিন দাবীগুলি মেনে নেয়। তপশীল জাতির ২২ জন এম এল এ নাজিমুদ্দিনকে সমর্থন করায় তিনি ১৯৪৩ সালে মন্ত্রীসভা গঠন করেন। এই মন্ত্রীসভাকে আরো ৫ জন হিন্দু নেতা সমর্থন করেন এবং মন্ত্রিত্ব অর্জন করেন।
তারা হলেনঃ
১)তুলসী চরণ গোস্বামী,
২)হাওড়ার কংগ্রেস নেতা বরদা প্রসন্ন পাইন,
৩)উত্তর পাড়ার বিক্ষাত জমিদার তারক নাথ মুখার্জি,
৪)প্রেম হরি বর্মা ও
৫)পুলীন বিহারী মল্লিক।
এছাড়াও এই মন্ত্রীসভার আরো ৬ জন হিন্দু পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি ছিলেন।
তারা হলেন ঃ
১) পাবনার নরেন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী
২) জে এন গুপ্ত (নেতাজী সুভাষের জীবনী রচয়িতা)
৩) রংপুরের যতীন্দ্র চক্রবর্তী
৪) রায় বাহাদুর অনুকুল চন্দ্র দাস
৫) আসানসোলের বঙ্কু বিহারী মণ্ডল ও
৬) যশোরের রসিকলাল বিশ্বাস

যোগেন্দ্রনাথে যুক্তি ছিল যে, তপশীল জাতির অধিকাংশ মানুষ গরীব। তারা কৃষক ও শ্রমিক। শিক্ষা দীক্ষায় অন গ্রসর। মুসলমানদের অধিকাংশ তাই। এই মন্ত্রীসভা দ্বারা অনগ্রসর মানুষের কল্যাণ সাধিত হবে। উল্লেখ করা দরকার যে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল এই মন্ত্রী সভার সদস্য ছিলেন না। কিন্তু তার এই ভাগীদারী মডেল যে পরবর্তীকালে সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ণের এক বৃহত্তম নিদর্শন হয়ে উঠবে তা সবর্ণ সমাজের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। তারা বুঝতে পারেন যে এই মডেল কার্যকরী থাকলে সবর্ণ সমাজ তাদের কৌলীন্য হারাবে এবং কোনদিনই ক্ষমতার শীর্ষ পদটি দখল করতে পারবে না।
শ্যামাপ্রসাদ ফজলুল হককে এবং মুসলিম লীগকে সমর্থনের পেছনে ছিল বাংলার জমিদারদের সমর্থন।
তারা ফজলুল হককে সামনে রেখে তাদের হাতে নিয়ন্ত্রণ রাখতে চেয়েছিলেন। এই সময় সবর্ণ সমাজের জমিদারেরা ছিলেন কংগ্রেস পার্টির প্রত্যক্ষ সমর্থক।
কিন্তু নাজিমুদ্দিন ও পরবর্তী কালে সোহরাবর্দী বাংলার প্রধানমন্ত্রী হলে তাদের সেই প্রচেষ্টা মার খেয়ে যায়। সক্রিয় হয়ে ওঠে হিন্দু মহাসভা ও কট্টর পন্থী মুসলিম লীগ। লীগ ১৯ জুলাই ১৯৪৬ সালে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম প্রস্তাব গ্রহণ করে। ১৬ আগস্ট ১৯৪৬ বিক্ষোভ প্রদর্শনের দিন ধার্য করা হয়। ভারতের কম্যুনিস্ট পার্টিও মুসলিম লীগকে সমর্থন করে।
এই সময় ভারতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও আইনসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে "সম্মানের সাথে" ক্ষমতার হস্তান্তর বিষয়টি আলোচনা করার জন্য ক্যাবিনেট মিশন ভারতে আসে। দুইটি যুযুধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে শুরু হয় ভাগ বাটোয়ারার হিসেব নিকেশ। ইংরেজরা কংগ্রেসের হাতে ক্ষমতার ভার দিয়ে যাবার প্রস্তাব দিলে জিন্না বেঁকে বসে। ১৯৪৬ সালে দিল্লীতে মুসলিম লীগের সম্মেলনে জিন্না ফজলুল হকের দেখানো পথে পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবী তোলেন। এই সুযোগে কংগ্রেস ভারতের কয়েকটি বিশেষ পরদেশের বিভাগের জন্য দাবী তুলতে শুরু করে। এই বিভাগের প্রশ্নে কংগ্রেস বাংলা ও পাঞ্জাবের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়। করাণ আইন সভার নির্বাচনে এই দুটি প্রদেশ থেকে তারা প্রায় নির্মূল হয়ে যায়।
১৯৪৭ সালের ২০শে জুন বাংলা ভাগের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। এই সভায় কংগ্রেসের হিন্দু সদস্যগণ বাংলা ভাগের পক্ষে কিন্তু মুসলমান সদস্যরা বাংলা ভাগের বিপক্ষে ভোট দেয়। যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের নেতৃত্বে তপশীল জাতি ফেডারেশন বাংলা বিভাগের পূর্নত বিরোধিতা করে। তখন তিনি অন্তর্রর্তী কালীন ভারতবর্ষের আইন মন্ত্রী। ১৯৪৭ সালের ২৩শে এপ্রিল হিন্দুস্থান টাইমসে একটি পূর্ণ বয়ান দিয়ে তিনি জানান যে, তপশীল জাতি বাংলা বিভাগের সম্পূর্ণ বিরোধী।

জিন্না কিন্তু বাংলা ভাগের বিরোধী ছিলেন। বড়লাটকে একটি চিঠি দিয়ে তিনি বাংলা ও পাঞ্জাব ঐক্য না ভাঙার কথাই বলেন। তিনি জানান যে, বাংলা ও পাঞ্জাবের একটি সাধারণ চরিত্র আছে, যা এদের কংগ্রেসের সদস্য হওয়ার থেকেও অনেক বেশি। তিনি আরো জানান যে, এরা নিজেরাই ঠিক করুক তারা কোন গ্রুপে থাকবে। ২৬শে এপ্রিল জিন্না মাউন্ট ব্যাটেন কে বলেছিলেন যে, তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হবেন যদি বাংলা ঐক্যবদ্ধ ভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র হয়।

এই সময় অবিভক্ত বাংলার নেতৃত্ব দেন শরৎচন্দ্র বসু। তিনি তখন বাংলা কংগ্রেসের সভাপতি হলেও কার্যত তার হাতে কোন ক্ষমতা ছিলনা। তার চেষ্টায় ফজলুল হকের নেতৃত্বে একটি কোয়ালিশন সরকার গঠন হয়। কংগ্রেসি চক্রান্তেই তাকে জেলে যেতে হয়। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেন এবং সার্বভৌম বাংলা গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। শরৎচন্দ্র বসু মহাপ্রাণকে তপশীল জাতির নেতা হিসেবে গ্রহণ করেন।

অমৃতবাজার পত্রিকাও বাংলা ভাগের পক্ষে জনমত গঠন করতে সক্রিয় ছিল। তারা জানায় যে, বাংলার ৯৮.৬ শতাংশ মানুষ দেশভাগ চাইছে, এটা নাকি তারা একটি ওপিনিয়ন পোল করে সংগ্রহ করেছে। পার্টিশান লীগের পক্ষ থেকে পশ্চিম বাংলাকে আলাদা করে তাকে ভারত রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করার উপরে ব্যপক প্রচার শুরু হয়। এই বিভাগে এগিয়ে আসে মাড়োয়ারি ব্যবসাদার, বিড়লা,গোয়েঙ্কা, ঈশ্বর দাস জালান। তারা প্রচুর পরিমাণে অর্থ ঢালতে শুরু করে দেশ বিভাগের পক্ষে কারণ এই বিভাগে তারাই সবথকে বেশি লাভবান হবেন। তাদের পয়সা দিয়েই তখন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, বিধান রায়, নলিনী সরকার, এন সি চ্যাটার্জিদের আন্দোলন চলে। ৪ এপ্রিল ১৯৪৭ সালে, তারকেশ্বরে হিন্দু মহাসভার একটি সম্মেলনে এন সি চ্যাটার্জি বলেন,"বিষয়টা আর দেশভাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বাংলার হিন্দুরা আলাদা প্রদেশ গড়ে শক্তিশালী দিল্লী কেন্দ্রিক জাতীয় সরকারের অধীনে থকাবে। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি একই সুরে বলেন যে, দেশ ভাগই সাম্প্রদায়িক সমস্যার একমাত্র সমাধান।
চলবে ...

Friday 1 November 2013

কালীপূজা আদিম হিংস্রতার পৈশাচিক প্রজেকশন

কালীপূজা আদিম হিংস্রতার পৈশাচিক প্রজেকশন
                                          
বাংলায় বামুনেরা কি বেশি রকমের বাঙালি(অসুর) বিদ্বেষী? তা না হলে ধর্মের নামে তারা এমন বাঙালি নিধনের ঢালাও পরিকল্পনা করলেন  কেন?  কেনইবা হিংসা, বিদ্বেষ, সন্ত্রাস ও নরহত্যার এমন ঢালাও প্রদর্শন টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করছেন মনুবাদীরা ! দুর্গা-কালি পূজার নামে ঢালাও মদের যোগান দেওয়ার ঘোষণা এবং সরকারের প্রধানদের  একে উৎসাহিত করার এমন উন্মত্ততা  কিসের ইঙ্গিত বহন করে ! একি কোন বিকারগ্রস্থতা না ব্যবসায়ী ফন্দি! না আসু কোন প্রলয়ের জন্য বলির পাঁঠার মতো অসুর বাঙালীকে প্রস্তুত রাখা!  যাতে সঠিক সময়ে অসুর বাঙালীর মুণ্ডু দিয়ে আবার ব্রাহ্মন্যবাদী কালীর অভিষেক হতে পারে ! এমন জিঘাংসা,  এমন উন্মত্তা ও ভেদ নীতির সগর্ব আয়োজন পৃথিবীর সভ্য দেশগুলিতে খুঁজে পাওয়া দুরূহ। ঘটনা হল, বাংলায় এসব বহাল তবিয়তে চলছে, এবং একে মহিমান্বিত করার জন্য সরকারের প্রধানরা পর্যন্ত প্যান্ডেলে  প্যান্ডেলে গিয়ে অসুর বাঙালী নিধনের জন্য শিরা ফুলিয়ে মন্ত্র উচ্চারণ করছেন! শপথ গ্রহণ করছেন, “আসছে বছর আবার হবে”। 
বাংলা এখন বর্বরতার আঁতুড়ঘর
আদিম হিংস্রতা, বর্বরতা ও পৈশাচিক প্রবৃত্তি নরতত্ব,সমাজতত্ব ও মনোবিজ্ঞানের একটি   বিরলতম অধ্যায়। মানুষের জিনোটাইপ ও ফিনোটাইপের আড়ালে এগুলি কি ভাবে প্রচ্ছন্ন হয়ে আছে তাও গবেষণাগারের সিরিয়াস পরীক্ষা নিরীক্ষার চ্যাপ্টার। পৃথিবীর বিবর্তনের কারণেই হোক বা গতিজাড্যের কারণেই হোক হোমোইরেক্টাস যুগের আদিম বর্বর মানব প্রজাতি বাংলায় কিন্তু কেন্দ্রীভূত হয়েছে এবং যোগ্যতম  প্রজাতি হিসেবে এই বিশেষ শ্রেণির মানুষেরা তাদের বিরলতম প্রতিভা এবং স্বভাবটি ধরে রেখেছে তাদের আচার, বিচার ও ধর্মীয় আচরণের মাধ্যমে। নিঃসন্দেহে একটি প্রজাতির ক্ষেত্রে এটি একটি প্রবল গুন। লক্ষণীয় বিষয় এই যে, হিংস্রতার এই প্রবল গুনটি তারা অন্য প্রজাতির মধ্যেও সঞ্চারিত করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে প্রবৃত্তিটি মানব মজ্জায় ঢুকে গিয়ে একটি স্থায়ী স্বভাবে রূপান্তরিত হয়ে পড়েছে। বিস্তার লাভ করেছে এবং মূলাধারটি জৈব বৈচিত্রের (জাত ব্যবস্থা) আড়ালে সুরক্ষিত হয়ে আছে। এহেন দুর্লভ, বিরল ও আদিম হিংস্র বিষয়টির জন্যই সম্ভবত বাংলা একসময় গোটা পৃথিবীর গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে চলেছে।    
কালীপূজা এক বীভৎসতার প্রজেকশন?  
হাতে ঝুলছে কাঁটা নরমুণ্ড । খড়্গ থেকে ঝরে পড়ছে টাটকা রক্ত । নরমুণ্ডুগুলি থেকে ঝরে পড়া রক্ত পান করছে পিশাচ ও শৃগাল। ইতিউতি পড়ে আছে পুরুষের মুণ্ডহীন ধড়। তিনি "কালী করাল বদনী, অসি, পাশধারিণী, বিচিত্র খট্বাঙ্গধারিণী, নরমুণ্ড ভূষিতা। তিনি ব্যাঘ্র চর্ম পরিহিতা, শুষ্ক মাংস ভৈরবীরূপিণী বিস্তৃত বদনা, লোল জিহ্বা, ভীষণা”। লকলকে জিভ দিয়ে চেটেপুটে পান করছেন সেই রক্ত! চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকা শিবের(ঈশ্বর) বুকের উরপ পা তুলে এই তাণ্ডব নর্তন বীভৎসতার প্রতীক নয়। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির বিজয় উল্লাস।
হ্যা, এমনটাই মেনে নিতে হবে। নতুবা মান-সম্মান-মুণ্ডু সবটাই যাবে।
বিদ্যাপতি কালীকা পুরাণের থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে এমন এক শবরোৎসবের উদাহরণ দিয়েছিলেনঃ ‘কুমারী, বেশ্যা, নর্তকীদের নিয়ে শঙ্খ, তূর্য, মৃদঙ্গ, ঢোল বাজিয়ে বহুবিধ ধ্বজা বস্ত্র সহ খৈ, ফুল ছড়িয়ে, পরস্পরের প্রতি ধুলো কাঁদা ছিটিয়ে ক্রীড়া ও কৌতুক গান করতে করেতে যাত্রা করবে। ভগলিঙ্গ, যৌনউত্তেজক গান এবং তদৃশ্য বাক্যালাপ করে আনন্দ করবে, এই সময় যে ব্যক্তি অশ্লীলতা ভালোবাসেনা বা নিজেও অপরের বিরুদ্ধে এরূপ শব্দ ব্যবহার করেনা ভগবতী ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে শাপ দেবেন এবং বিনাশ করবেন’।
বৃহদ্ধর্ম পুরাণেও এই শবরোৎসবের বর্ণনা আছেঃ
‘ভগ লিঙ্গাভিধানৈশ্চ শৃঙ্গার বচনৈ স্তথা –
গানং কার্যং ভোজয়চ্চ ব্রাহ্মনাৎ স্তোষয়েস্ত্রিয়া’।
(  বৃহদ্ধর্ম পুরাণ ২২ অধ্যায় ২০-৩০পৃ )       
দ্বিজ রামপ্রসাদ তার গানের মধ্যে কিন্তু প্রশ্ন করে বসেছিলেন, ‘বসন পর মা’ বা ‘শিব কেন তোর পদতলে, মুণ্ডু মালা কেন গলে’। কি জানি হয়তো এমন বীভৎসতার প্রজেকশন তিনি ও মেনে নিতে পারেন নি। আজও কালী পূজার সময় পান্নালাল ভট্টাচার্যের গলায় তার এই আকুতি আমরা শুনতে পাই। কিন্তু পান ভোজন ও আদিমতার নেশায় তার আকুতির জবাব পাওয়া যায়না। তাই মজ্জাগত স্বভাবেরও কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়না।    
কিন্তু এমন বীভৎস কালী মূর্তি কেন রচনা করলেন বাংলার পণ্ডিত প্রবরেরা! লোকায়ত কালচক্কযান বা তারার প্রকৃত অর্থ কি তারা বুঝতে পারেনি! না চৌর্য বৃত্তিকালে এগুলো বিকৃত করে তাদের আদিম বিকারগুলিকে ধর্মের মোড়কে পরিবেষণ করলেন? মদ-গাঁজা, সিদ্ধি-ভাং ও চুল্লু-তাড়ির নেশা ধরিয়ে জনগণকে বুদ করে রেখে নিজেদের সুরক্ষিত করলেন ?
ভাবীকালের গবেষকেরা নিশ্চিত এ নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন। ম্যান মিউজিয়ামের এমন উর্বর ক্ষেত্র হিসেবে বাংলা সেদিন হোমো- ইরেক্টাস জামানার আদিম হিংস্রতার জন্য বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নেবে। কিন্তু ততদিন তো চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে কালিকা পুরাণের সাজেশন। তাইতো আবেগ মোহিত গলায় মুখ্যমন্ত্রীর গলায় চণ্ডী পাঠের ফোয়ারা ছোটে। কোল্লামখুল্লা প্রোমোদের জন্য মদ, গাঁজা, চুল্লুর ঢালাও জোগানের ফরমান জারি হয়। বেঁচে থাক ব্রহ্মন্যবাদ। বেঁচে থাক আদিম হিংস্রতার পৈশাচিক প্রবৃত্তি।                                              


Thursday 3 October 2013

দুর্গাপূজা না নরমেধ যজ্ঞ -২


ধম্ম বিজয়ার দিনে কেন এই দশেরা বা দশহরা ?কলিঙ্গ বিজয় সম্রাট অশোকের জীবনে ধম্মানুভুতির একটি মাইলস্টোন। শোকাহত রাজা ঘোষণা করলেন তিনি আর যুদ্ধ বিজয়  করবেন না করবেন ধম্ম-বিজয়। মানবতা ও সখ্যতার মাধ্যমে গুড়িয়ে দেবেন জাত-পাতের প্রাচীর ও দেশ কালের সীমানা। বিশ্বভ্রাতৃত্ব এবং বসুধৈবকুটুম্বকম এর  নিবিড় বন্ধনে সব মানুষের মন জয় করবেন। সম্রাট অশোকের নেতৃত্বে এবং তার গুরু ভন্তে মোগলীপুত্ত তিস’র সভাপতিত্বে পাটলিপুত্রে সংঘটিত হল তৃতীয় বুদ্ধ ধম্ম সম্মেলন “ধম্ম বিজয়”।     ১৩ নং রক এডিক্টএ সম্রাট ঘোষণা করেন 'অসুপুত্ত পপৌত্ত মে নবম্ বিজয়ম বিজিতব্যম  আমার পুত্র এবং প্রপৌত্ররাও কোন নতুন রাজ্য যুদ্ধ বিজয় করবেনা যদি বিজয় করতে হয় তা হবে ধম্ম-বিজয়।অসুর দর্শনের এই মূল বাণীকে ধ্বংস করার জন্যই ভুদেবতারা এই দিনে দশেরা বা বিজয়া দশমী পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
আজও এই মূলনিবাসী গণনায়কদের প্রতিকী পুতুল পুড়িয়ে ব্রহ্মণ্যবাদী বর্বরেরা বিজয় উল্লাস পালন করে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় ৮৫% অসুর ভারতবাসীর রক্ত শুষে এই পৈশাচীক উৎসব মূলনিবাসীদের আত্মমর্যাদা, আত্মপরিচয় স্বধম্মের উপর এক সামাজিক বলাৎকার এবং ঘৃণ্য চক্রান্ত। মানুষকে জ্বালানো, মানুষকে হত্যা করার এই প্রতীকি উৎসব পালন করতে ওরা কুন্ঠিত হয় না কেননা মূলনিবাসী অসুরদের পরাজয়ের মধ্যেই দেবতাদের বিজয় উল্লাস প্রতিষ্ঠিত হয়।
 এই দশহরাই বাংলায় “বিজয়া দশমী”   বাংলায় এই দেবায়ন সুরু হয় হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর।  কনৌজ তখন বৈদিক ধর্মের প্রধান ঘাঁটিতে পরিণত । কুমারিল ভট্টের নেতৃত্বে ব্রাহ্মণেরা পৈশাচিক হত্যালীলায় মেতে ওঠে। হাজার হাজার বৌদ্ধ শ্রমণের মাথা ধড় থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বৌদ্ধ শাস্ত্র রাশি। অনেক বৌদ্ধ শ্রমণ পুঁথিগুলি বাঁচানোর জন্য হিমালয়ের রাজ্যগুলিতে আশ্রয় নিতে বাদ্ধ হয়।
কনৌজ তখন বিজয়ী ব্রাহ্মণদের রাজধানী। কূমারিল ভট্ট তাঁদের প্রধান। কূমারিল ভট্ট মীমাংসা সূত্রের উপড় একটি কমেন্টরই লেখেন। এই সময় থেকে সারা ভারতবর্ষে কনৌজ থেকে ব্রাহ্মণ সরবরাহ করা হতো। অসুর বাংলায় এই সময় থেকেই ব্রাহ্মণের চালান শুরু হয়।  বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বহুবিবাহ এবং সম্বন্ধ নির্ণয় গ্রন্থে বাংলায় চালান হওয়া ৫জন ব্রাহ্মণ ও তাদের চাকরের তালিকা দেওয়া হয়েছে ঃ১) ভট্টনারায়ণ২) শ্রীহর্ষ ৩) দক্ষ৪) বেদগর্ভ৫) ছান্দড়এদের সঙ্গে আসা চাকরগুলো যথাক্রমে ঃ১) মুকুন্দ ঘোষ২) বিরাট/দাশরথী গুহ৩) দশরথ বসু৪) কালিদাস মিত্র৫) পুরুষোত্তম দত্তবল্লাল সেন  অসুর বাংলাকে কৌলীন্য প্রথার  চোলাই গেলাতে শুরু করেন এবং  বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে ভুদেবতা ও তাদের ভৃত্যদের ভূদান, গাঁই দান, গোত্র দান করে দেব সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেবার ব্যবস্থা করেন। ভুদেবতারা ১৫শ শতকে বাংলায় এই দশেরা বা দশহরা কে নতুন কলেবরে প্রতিষ্ঠা করার তোড়জোড় শুরু করেন।
বাংলায় প্রথম দুর্গা পূজা ঃ ইংরাজী সংবাদপত্র- এর ২৮/১০/১৯৬১ সালের চিঠিপত্র কলমে শ্রী সুরথ চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির একটি চিঠি প্রকাশিত হয়। তিনি দাবি করেন যে, রাজসাহী জেলার তাহেরপুরে রাজা কংস-নারায়ণ পঞ্চদশ শতাব্দীতে প্রথম দুর্গোৎসব করেন। সেই সময় কবি কৃত্তিবাস ওঝা নাকি রাজা কংসনারায়ণের সভাকবি ছিলেন। কবি কৃত্তিবাস রচিত বাংলা রামায়ণে এই দুর্গাপূজাকে অকাল বোধন হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।ডাঃ দীনেশচন্দ্র সেনের উল্লেখ করেনঃকেহ কেহ অনুমান করেন, কৃত্তিবাস তাহেরপুরে রাজা বা জমিদার কংস-নারায়ণের সভায় উপস্থিত হইয়াছিলেন। কিন্তু, কংস-নারায়ণের শেষে যে বংশাবলী পাওয়া গিয়াছে, তাহাতে তাঁহাকে ষোড়শ শতাব্দীর লোক বলিয়া অনুমিত হয়। সুতরাং, ‘রাজা কংস-নারায়ণ পঞ্চদশ শতাব্দীতে প্রথম দুর্গোৎসব করেন বলে জানা যায়, এই কথাটার মধ্যে দিনাঙ্কের একটা ভালো রকম গণ্ডগোল পাওয়া যাচ্ছে।মুসলমান বিজয়ের/আক্রমণের পর হিন্দু রাজা গণেশের গৌড়ের সিংহাসনে আরোহন করেন। তিনি ১৩৯৮ খ্রী. পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। কবি কৃত্তিবাস জন্মেছিলেন ১৩০০ খ্রিষ্টাব্দের আশেপাশে। তিনি হয়ত এই সময়ে রাজা গণেশের সভায় এসে থাকবেন। 
খোদ কোলকাতায় দেবী পূজা ঃ
শঙ্কর রায়ের একটি লেখা থেকেই তুলে  দিলাম
Imagine Calcutta in 1757, when it looked like a village with huge vacant spaces strewn haphazardly. A grandiloquent Durga puja was underway. The venue was a newly-built pucca house built upon a four-acre strip by the yet-to-be crowned Nabakrishna Deb, who named the palatial residence as Shobhabazar Rajbari. There was a VVVIP at the centre of a podium, an Englishman, colonel Robert Clive of the English East India Company (EEIC), who had conquered Bengal by defeating Nawab Mirza Muhammad Siraj-ud-doula in the Battle of Plassey on June 23 that year. Clive was the chief guest. Religious scruples were on the wayside and nautch girls, mostly from Muslim gharanas, entertained the Englishmen attending the dance-parties. For the new rulers, beef and ham were bought from Wilson’s Hotel, let alone unlimited drinks that inebriated them. Unbelievable as it may seem, Deb had the nod from orthodox Sanskrit pundits in bringing Clive, a firinghee, to grace a Hindu religious event in those days. Literary historian and poet, Abanti Kumar Sanyal, throws light on the situation in a small book, Baboo. Clive’s Sanskrit tutor was Jagannath Tarkapanchanan, according to Sanyal, submitted to Clive for a handsome pension. As a result, there was no clamour from the erudite-but-conceited Sanskrit pundits of Bhatpara (now in the North 24 Parganas district). Deb was conferred the title of ‘Maharaja’ by Warren Hastings in 1766 for his unflinching loyalty and services rendered to the company. This included the drafting of the infamous 1775 agreement between the EEIC and a group of ‘aggrieved’ royal officials, for dethroningSiraj-ud-Doula, the last king of greater Bengal. The agreement was signedat the palace of Jagat Seth, one of the signatories and the largest banker of Asia in those days (financially several times larger than the first ten bankers of Britain together). Other signatories included Siraj-ud-doula’s commander-in-chief, Mir Jaffar, Roy Durlabh and Umichand. Also present was the Maharaja of Krishnagar, portrayed as a patron of art and culture, whom social historian Benoy Ghosh described as the initiator of ‘dependent and colonial culture’, hybridised with feudal grandeur. The conspirators alleged that the young Nawab had instituted an unbearable misrule and was atrociously lascivious, making beautiful damsels insecure, and was a drunkard. This canard was later refuted by Luke Scrafton, the director of the East India Company between 1765 and 1768, “The name of Siraj-ud-daula stands higher in the scale of honour than does the name of Clive. He was the only one of the principal actors who did not attempt to deceive.” He wrote that the young Siraj had taken an oath on the Quran at his father’s deathbed that he would thenceforth not touch liquor – and that he had kept his promise. The conspirators gradually became a symbol of hatred when anti-colonial sentiment grew during the national freedom struggle. It is said that the land Deb’s house was built on belonged to Sobharam Basak, who was much wealthier, and that Deb pressurised Basak using his proximity to Clive. The new palace had a big dancing hall, an entrance where shehnai tunes used to welcome the guests, a large library of Sanskrit, Farsi, Arabic and English titles, and a mammoth dinner room, apart from scores of living rooms. Much of this is now on the pages of history textbooks. Deb’s ceremony of 1757 might have set a pattern for the Durga puja, which became a fashion andstatus symbol among the upcoming merchant class of Kolkata. Deb and his descendants, like Raja Radhakanta Deb, considered the aliens attending the family Durga Puja as an index of social prestige. Over two centuries, the festival turned into a socio-religious celebration, more dispersive perhaps than Ganesha Chaturthi in Maharashtra or Dussera in northern India.http://www.dnaindia.com/lifestyle/report_durga-pujas-colonial-roots_1754517 দাশাই পরব ঃদাশাই পরব অসুর-আদিবাসীদের একটি শোকপালনের পরব পাঁচদিন ধরে চলে এই শোক পালন কারণ বিদেশী দেবতারা তাদের প্রিয় রাজাকে নারীকে দিয়ে হত্যা করেছে অথবা বন্দী করে নিয়ে গেছে কোন গোপন ডেরায় অসুর যোদ্ধারাও তাই নারীর ছদ্মবেশ ধারন করে।  বেরিয়ে পড়ে তাঁদের রাজাকে খুঁজতে শুরু করে ভুয়াং নাচ। হাতে ভুয়াং বাদ্য যন্ত্র। ভুয়াং আসলে তীর ধনুকের ছদ্ম যন্ত্র যাতে সন্ধিক্ষনে যুদ্ধ বিজয়ে সেগুলো কাজে লাগে মুন্ডা,কোল আদিবাসীরা দাবী  করেন দুর্গা তাদের মেয়ে দেবতারা তাকে দুর্গে ধরে নিয়ে যায়। বেশ্যা বানায় হাঁড়ি সম্প্রদায়ের দাবী চণ্ডী তাঁদের মেয়ে দেবতারা তাকে দিয়ে তাঁদের রাজাকে হত্যা করে আজও বুক চাপড়ে হায়রে- হায়রে আওয়াজ করে ভুয়াং নাচের মাধ্যমে আদিবাসীরা তাঁদের রাজাকে খুঁজে বেড়ায়বেশ্যা দুর্গার হাতে বৃহৎ বঙ্গের রাজা বঙ্গাসুরের হত্যা কাহিনী এভাবেই লোকায়ত হয়ে আছে আদিবাসীদের মধ্যে আদিবাসী সত্তায় রাজত্ব হারানোর স্মৃতি এখনও সমান ভাবেই বর্তমান বিদেশী দেবতারা এখনো মানব হত্যার মন্ত্রগুলি বিজয় উল্লাসে উচ্চারণ করে চলছে প্রতি বছর কুমারী পূজার নাম করে চলছে দুর্গা বানানোর প্রতিযোগিতা। ধর্মীয় মোড়কে পরিবেশন করা হচ্ছে জিঘাংসার বিষ কাত্যায়নী, চামুণ্ডা ও  ভৈরবীদের মোহে আচ্ছন্ন করে রাখা হচ্ছে অসুর বাঙালীকে। বাঙ্গালী তাই আত্মবিস্মৃত। ভূদেবতাদের উল্লাস, ঢাকের গগন ভেদী গর্জনে ঢাকা পড়ে গেছে তাদের পূর্বপুরুষের আর্তনাদ। ধুপের ধোঁয়া আর ফুল বেলপাতার গন্ধে ঝাপসা হয়ে গেছে তার দৃষ্টি। দেবায়ন ও দেব দর্শনের হাঁড়িকাঠে  অসুর বাঙালীর নির্বীর্য করণ ও নরমেধের এটাই এখন সব থেকে শক্তিশালী  নিধন যজ্ঞ।