Pages

Monday 22 September 2014

বাবা সাহেবের ধর্মান্তকরণ ও বিজয়া দশমী

   









        বাবা সাহেবের ধর্মান্তকরণ ও বিজয়া দশমী
জগদীশ রায় (মুম্বাই) M No. 09969368636  E-mail ID roy.1472@gmail.com
    আমরা জানিযে, 14October 1956 সালে বাবা সাহেব ডঃ বি. আর. আম্বেদকর  বৌদ্ধধম্ম গ্রহন করেছিলেন বা স্বধম্মে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন ।
    কিন্তু এখানে বিশেষ আলোচ্য বিষয় হচ্ছে বাবা সাহেব 14October 1956 হিসাবে বৌদ্ধধম্ম গ্রহন করেননি । তিনি 1935 সালে 13October মহারাষ্ট্রের ইওলা (Yeola) তে ঘোষণা করেন যে, ‘আমি হিন্দু ধর্মে জন্ম গ্রহন করেছি, যেটা আমার হাতে ছিলনা । (অর্থাৎ যে ক্ষেত্রে আমি কিছু করতে পারিনা। ) কিন্তু আমি হিন্দু হয়ে মৃত্যু বরণ করব না।’  এই ঘোষণার স্থলকে  বাবা সাহেব নাম দিয়েছেন –‘মুক্তিভুমি’
    এখন কথা হচ্ছে, 1935 সালে ধর্ম পরিবর্তনের কথা ঘোষোণা করেন, কিন্তু তিনি 1956 তেই কেন ধর্ম পরিবর্তন করেন ? 1935 থেকে 1956 পর্যন্ত তো অনেক সময়। তবে তিনি 1956 কেই কেন ধম্মপরিবর্তনের জন্য বেছে নিয়েছিলেন ? এর পিছনে কি কোন বিশেষ কারণ আছে ?
    হিন্দুধর্মে বিশ্বাসী বাঙ্গালিদের দুর্গা পূজার মধ্যে একদিন হয় দশমী। প্রচলিত কথায় বলা হয়, রাম, রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে বিজয়ী হয় ; তাই এই বিজয় দশমী। বাস্তবে কি তাই ? দুর্গা পূজার ইতিহাস তো সেদিনকার আর রাম বিজয় প্রাপ্ত হয়েছিল বলে বিজয়া দশমী করা হ’লে বাংলার  বাইরে কেন হিন্দুধর্মে বিশ্বাসী বাঙালিরা ছাড়া অন্য কেউ এই পূজা করেন না ?
আসলে এই বিজয়া দশমীর ইতিহাসকে Encounter করা হয়েছে। আর ব্রাহ্মণরা তাদের সুবিধা মত কাহিনীতে রূপান্তারিত করেছে।  
    এবার আসি আসল প্রসঙ্গে। মহারাষ্ট্রে বিশেষ করে বৌদ্ধধম্মে বিশ্বাসীরা বিজয়া দশমীকে খুব করে পালন করেন। কারণ বাবা সাহেব বিজয়া দশমীর দিন ধর্মান্তর করেছিলেন। কিন্তু সাধারণতঃ প্রচার হয় যে, বাবা সাহেব 14 October ধর্মান্তর করেছিলেন। এর পিছনে আসল ঘটনা কি ?  
    আপনারা অনেকেই হয়তঃ জানেন যে, সম্রাট অশোক বৌদ্ধ ধম্ম গ্রহন করেছিলেন কলিঙ্গ  বিজয়ের পর। সম্রাট অশোকের জীবনে ধম্মানুভুতির মাইলস্টোন হিসাবে কলিঙ্গ বিজয়কে মনে করা হয় তিনি যে দিন এই বৌদ্ধধম্ম গ্রহন করেন, সেই দিনটি ছিল আশ্বিন মাসের শুক্লা দশমীর দিন। তিনি হিংসার নিতি থেকে মুক্ত হয়ে  বিজয় প্রাপ্ত হন। সারা দেশে পালিত হোল উৎসব। শারদোৎসব। অর্থাৎ শরৎকালের বিজয় উৎসব। সম্রাট অশোকের ধম্মবিজয় উৎসব। যা পরবর্তীকালে সারা ভারতবর্ষে রাষ্ট্রীয়  উৎসবে পরিণত হয়। তো সম্রাট অশোক যে,  বিজয় প্রাপ্ত করেছিলেন সেই বিজয়ের আড়াই হাজার (2500) বছর পূর্ণ হচ্ছিল 1956 সালের October মাসে আর ওই মাসের যে দশমীর দিন ছিল সেটা ইংরাজী মতে 14 October ছিল। বাবা সাহেব কিন্তু 14 October  মনে করে ধর্মান্তর করেননি। তিনি একাধারে সম্রাট অশোকের প্রতি যেমন শ্রদ্ধার্পণ করেন। তেমনি 1956 সালের October মাসের দশমীর দিনকে ঐতিহাসিকভাবে স্মরণ করেন এবং সবাইকে এই দিনটির গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছিলেনতাই October মাসের দশমীর দিনটাকে বৌদ্ধিক ভাবনায় বলা হয় অশোক বিজয় দশমী সেই অশোক বিজয় দশমীকে Encounter করে দিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদের বিজয় দশমীতে রূপান্তরিত করেছে।   
এবার এই Encounter এর ইতিহাস কিছুটা আলোচনা করা যাক। তারপর আবার এই দিন সম্পর্কে আলোচনায় আসা যাবে।
     ব্রাহ্মণরা যখন প্রতিক্রান্তি করে অর্থাৎ পুষ্যমিত্র শুঙ্গ দ্বারা সম্রাট অশোকের নাতি(চতুর্থ পিড়ি)  বৃহদ্রথকে হত্যা করে (185 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে) ব্রাহ্মণ্যবাদের সুত্রপাত করে। তারপরেই রামায়ণ লেখা  হয়। এর পূর্বে রাম  আর রাব ছিলই না। রাবণের যে  প্রতীক তাঁকে রাক্ষস বলে, অশুভ-এর প্রতীক বলে ঘোষণা করে আর রাবণের ‘দশমুখ’ দেখানো   হয়। আসলে বুদ্ধিজমে ‘দশপারমিতা’-এর বেশী মান্যতা দেওয়া হয়। আর সে জন্য রাবকে দশ  মুখওয়ালা বানিয়ে দেখানো হয়েছে। আট, নয় বা এগার মুখ ওয়ালা কেন দেখানো হয় নি ?   
    ব্রাহ্মণরা যখন প্রতিক্রান্তি করে তখন থেকে ভারতে বিজয়া দশমী উৎসব হিসাবে  পালন করে। আর সম্রাট অশোক যে বিজয় প্রাপ্তি করেন দশমীর দিন তাকে সমাপ্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র চালু করে। মারাঠীতে যাকে ‘দসরা’ বলে, আর হিন্দীতে লোকেরা একে ‘দশ্‌হরা’ বলে। যেটা দশ মুখওয়ালা রাবণকে ‘দশহরা’ নাম দিয়েছে, আর বিজয়া দশমীকে বিলুপ্ত করে দিয়েছে। আর এর  জন্য রাবণকে জ্বালানোর প্রকৃয়া করে।
    ফিরে আসি পূর্বের আলোচনায় বাবা সাহেব যে ধম্ম গ্রহন করেছিলেন, এখানে 14 October  কিন্তু মহত্ত্বপূর্ণ নয়। মহত্তপূর্ণ হচ্ছে-‘অশোক বিজয়া দশমী’র 2500 বছর পূর্ণ হওয়ার যেটা 1956 সালে হয়েছিল। আর দিনটি ছিল 14 October. তাই আমাদেরকে বাবা সাহেবের ধর্মান্তরের দিনকে 14  October না বলে ‘অশোক বিজয় দশমী’-এর দিন বলা বা লেখা উচিত কারণ বাবা সাহেবের উদ্দেশ্যে ছিল আশ্বীন মাসের সারদ শুক্লা বিজয়া দশমীকে পালন করা। কারণ সম্রাট অশোকের ধম্মপরিবর্তন দিন ইংরেজী তারিখ হিসাবে পালিত হয়নি। কিন্তু 1956 সালের 14 October ছিল অশোকা বিজয়া দশমীর দিন । তাই আমাদেরও বিজয়া দশমীকে সম্রাট অশোকের ‘অশোক  বিজয় দশমী’ দিন এবং বাবা সাহেবের ‘ধম্মচক্রপরিবর্তন’ দিন হিসাবে পালন করা উচিত।  কারণ বাবা সাহেব যে দিন অর্থাৎ এই অশোক বিজয় দশমীর দিন ধর্মান্তর করেন সেটা কে ‘ধম্মচক্র প্রবর্তন’ দিন বলা হয়। অর্থাৎ সম্রাট অশোকের বৌদ্ধধম্ম গ্রহনের দিন হচ্ছে অশোক বিজয়া দশমী, আর এই অশোক বিজয়া দশমীর দিন বাবা সাহেব যে বৌদ্ধধম্ম গ্রহন করেন তাকে নতুন নাম দেওয়া হয় ‘ধম্মচক্র প্রবর্তন’ দিন । ধম্মচক্র প্রবর্তন এর অর্থ হচ্ছে- বৌদ্ধ ধম্মের চাকা (সমতা, স্বতন্ত্রতা, বন্ধুতা ও ন্যায়) কে গতিশীল করা। এই ইতিহাস আমাদের জানা ভীষণ দরকার বলে মনে করি। কারণ সঠিক ইতিহাসই সঠিক দিশা নির্দেশ করে।আশা করি, এই লেখাটি আমাদের  বর্তমান এবং আগামী প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে সাহায্য করবে ।  

                             ____________________________

Sunday 14 September 2014

মতুয়াদের করণীয় (১)

মতুয়াদের করণীয় (১)

মতুয়াদের করণীয় বলতেই আমরা একবাক্যেই বুঝে যাই যে, যারা officially নাহলেও unofficially নিজেদের মতুয়া বলে মনে করেন, তাদের কি করা দরকার । অনেকেই বলতে পারেন- আবার officially/unofficially কথাটা কেন এল ? হ্যাঁ, এটা দিয়েই না হয় শুরু করি, মতুয়াদের করণীয় বিষয়ে ।

    প্রতিটি প্রতিষ্ঠিত  ধর্মের কিছু নিয়ম ও সংস্কার আছে, সেই ধর্মের প্রতিনিধি বা অনুন্যায়ী বা ঐ ধর্মীয় হওয়ার জন্য । যেমন- খৃষ্টান ধর্ম গ্রহন করতে হলে 'ব্যাপিৎসমা' গ্রহন করতে হয় । তারপর তিনি খৃষ্টান হন । তেমনি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতে হলে তাকে ('ছুন্নৎ') বিশেষ সংস্কারের মধ্য দিয়ে গিয়ে ইসলামকে গ্রহন করে মুসলমান হতে হয় । আবার বুদ্ধ ধম্ম গ্রহন করতে হলে দীক্ষা গ্রহন করতে হয়, যেটাতে বাবা সাহেব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ২২ (বাইশ) প্রতিজ্ঞা গ্রহনের নিয়ম আছে । আর হিন্দু ধর্মেও (আসলে ব্রাহ্মণ ধর্ম) পৈতা প্রথা আছে । যারা পৈতা সংস্কার করেন তারাই ঐ ধর্মের লোক । আর যাদের কোন সংস্কার হয়না তাকেও  ব্রাহ্মণদের সুবিধার জন্য হিন্দু বানিয়ে নিয়েছে । এরাঁ হচ্ছেন SC, ST এবং OBC.

     একটা কথা যেনে রাখা দরকার একটা শিশু যখন জন্মগ্রহন করে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি কোন দিয়ে বিচার করলে দেখা যায় যে, তার কোন ধর্ম(Religion) হয়না । সে সামাজিক ব্যাবস্থার শিকার হয়ে পিতার ধর্ম গ্রহন করতে শেখে বা বাধ্য হয় । যেখানে ধর্ম অনুযায়ী সংস্কারও থাকে  

     পতিত পাবন হরিচাঁদ ঠাকুর যখন ততকালীন সামাজিক পঙ্কিলতাকে উপলব্ধি করলেন তারঁ দূর দৃষ্টি (Vision) দিয়ে; তখন সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের মনুষত্বের স্তরে তুলে ধরার জন্য তাদের ধর্মহীন অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য উদ্ভাবন করলেন সহজ সরল নিয়ম কানুন ও সামাজিক জাগরণ মূলক এক মতবাদ যার নাম দিলেন "মতুয়া বাদ বা মতুয়া ধর্ম ।"

    যে ধর্মের মধ্যে উল্লেখীত হয়েছে বারটি(১২) আজ্ঞা বা আদেশ যাকে বলা হয় দ্বাদশ আজ্ঞা ।
সেগুলো নীচে দেওয়া হল-
 (১) গার্হস্থ্য ধর্ম পালন বা এক নারী ব্রহ্মচারিঃ
                                     করিবে গার্হস্থ্য ধর্ম লয়ে নিজ নারী।
                                     গৃহে থেকে সন্ন্যাসী বানপ্রস্থ ব্রহ্মচারী ।।
(২) সত্য কথা বলাঃ                  গৃহধর্ম রক্ষা করে বাক্য সত্য কয় ।
                                     বানপ্রস্থী পরমহংস তার তুল্য নয় ।
(৩) পরদুঃখে দুখী হওয়া এবং দুঃখীকে সহযোগিতা দানঃ
                                     পরনারী মাতৃতুল্য, মিথ্যা নাহি কবে ।
                                     পরদুঃখে দুঃখী সদাই সচ্চরিত্র রবে ।।
(৪) সাধন, ভজন, দীক্ষা, তীর্থ পর্যটন প্রভৃতি আচার সর্বস্বতা পরিত্যাগ করাঃ
                                     দীক্ষা নাই, করিবে না তীর্থ পর্যটন ।
                                     মুক্তিস্পৃহা শূন্য, নাহি সাধন ভজন ।।
(৫) ভাবের আবির্ভাবঃ                গৃহেতে থাকিয়া যার ভাবোদয় হয় ।
                                     সেই সে পরম সাধু জানিবে নিশ্চয় ।।
(৬) গৃহধর্ম ও গৃহকর্ম  করাঃ          গৃহধর্ম গৃহকর্ম করিবে সকল ।
                                     হাতে কাম মুখে নাম ভক্তিই প্রবল ।।
(৭) জ্ঞানতত্ত্বঃ                         কিবা শূদ্র কিবা ন্যাসী কিবা যোগী কয় ।
                                      যেই জানে আথতত্ত্ব সেই শ্রেষ্ঠ হয় ।।
(৮) জীবের প্রতি দয়া করা ও মানুষের প্রতি নিষ্ঠা রাখাঃ
                                     জীবে দয়া নামে রুচি মানুষেতে নিষ্ঠা ।
                                     ইহা ছাড়া আর যত সব ক্রিয়া ভ্রষ্টা ।।
(৯) উদ্ধার কর্তাকে(হরিচাঁদ)ঈশ্বর মনে করাঃ
                                    বিস্বভরে এই নীতি দেখি পরস্পর ।
                                    যে যারে উদ্ধার করে সে তার ঈশ্বর ।।
(১০) কর্ম ও ধর্মের সমন্বয় সাধনঃ
                                    মালাটেপা ফোটাকাটা জলফেলা নাই ।
                                     হাতে কাম মুখে নাম মনখোলা চাই ।।
(১১) পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, দেহ ও মনশুদ্ধ রাখাঃ
                                    নরনারী প্রাতঃস্নান অবশ্য করিবে ।
                                    দেহশুদ্ধি চিত্তশুদ্ধি অবশ্য আসিবে ।।
(১২) সংযম রাখাঃ                   পরপতি পরসতী স্পর্শ না করিবে ।
                                    না ডাক হরিকে, হরি তোমাকে ডাকিবে ।।
হরিচাঁদ নির্দেশিত এসব গুণের অধিকারি একজন গৃহী হয়ে ওঠা আসল কথা । এসব গুণের অধিকারি কোন গৃহী হরিকে না ডাকলেও হরি তাকে ডাকবেন ।
উপরে উল্লেখীত গুলোকে দ্বাদশ আজ্ঞা বলা হলেও এরকম আরো বেশ কিছু আজ্ঞা বা নির্দেশ আছে লীলামৃতের পাতায় পাতায় ।
    এই আদেশের সঙ্গে সাতটি নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হ', যাকে বলা হয় সপ্ত নিষেধাজ্ঞা। সে গুলো হ'লঃ- (১)ভিন্ন গুরু ও ভিন্ন দল না করাঃ
                                     মতুয়ার এক গুরু ভিন্ন গুরু নাই ।
                                     মধ্যস্বত্ত্ব জমিদারি ধর্মক্ষেত্রে নাই ।।
                                     ভিন্ন ভিন্ন দল কেহ করো না গোসাই ।
(২) নারী দিয়ে অঙ্গ সেবা না করাঃ     নারী দিয়ে অঙ্গসেবা হবে ধর্মক্ষয় ।
                                     তেল ঘসা অঙ্গসেবা মহা ব্যাভিচার ।
(৩) পরনারীকে মাতৃ জ্ঞান করে দূরে থাকা ।
(৪) পরিহাস বাচালতা কখন না করা ।
(৫)মদ গাঁজা ন খাওয়া এবং চুরি না করা ।
(৬) তাস-দাবা-জুয়া খেলা সব ছেড়ে দিতে হবে
(৭) কাউকে (অর্থাৎ দেব-দেবীর প্রতি) ভয় করার দরকার নেই।
                                    হরি বলে ডঙ্কা মার শঙ্কা কর কারে ।
                                    শ্রীহরি সহায় তব,  সাথে সাথে ফেরে ।।
এছাড়া- ভেকধারী বৈরাগীকে ভিক্ষা দিতে মানা করা হয়েছে, কারণ তাদের ভীক্ষা দিলে ব্যাভিচার আরো বেড়ে যাবে ।
 আবার বেদের বিধান ও আচার বিচারকে না মানতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    এই আদেশ ও নিষেধগুলো পালন করার নির্দেশ এইজন্য দেওয়া হ'ল যাতে মানুষ তার মনুষত্বকে খুঁজে পায় ।অলীকতার পিছনে বোকার মত ঘুরে না বেড়ায় ।
    আপনাদের মনে হ'তে পারে official/ unofficial শব্দের কথা বলতে গিয়ে এতকথা কেন ? কারণ ঐ official/ unofficial জানার জন্য এটা ভীষণ দরকার বলে মনে করছি ।

    দেখতে দেখতে আমরা মতুয়া ধর্ম প্রবর্তক হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মের ২০০(দুইশ) বছর অতিক্রান্ত করেছি । মতুয়া আকর গ্রন্থ হরিলীলামৃত প্রকাশও ১০০ (একশ) বছর(হরিলীলামৃত প্রকাশ-বাংলা ১৩২৩ সাল, ইংরাজি-১৯১৬) ছুঁতে চলেছে । আর আমরাও মহামনবদের রক্তকে  জলকরা কষ্টার্জিত অধিকার গ্রহন করে শরীরে বেশ কিছুটা চর্বি লাগিয়েছি । কিন্তু আমরা এই মতুয়া ধর্মকে সরকারি ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি কি ? আমরা নিজেদের ধর্ম হিসাবে সরকারিভাবে মতুয়া লেখার যোগ্যতা অর্জন করেছি কি ? যার জন্য আমার এই official/unofficial কথাটির উল্লেখ ।
জনগণনা বা সরকারিভাবে Religion/ধর্ম লেখার যায়গায় 'মতুয়া' লেখার অধিকার অর্জন করতে পেরেছি কি ? যদি না পেরে থাকি তাহলে তার কারণ কি ?
    তাহলেকি আমাদের স্বভাবটা এমন হোলনা যে, গাছের ও খাব আর তলারটাও কুড়াব। অর্থাৎ হিন্দু ধর্মের খোয়াড়ে থেকে সেটাও পালন করব আর বিশেষ করে অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজেকে বড় মতুয়া বলে জাহির করব । আর ঘরে হিন্দু দেব-দেবীর সঙ্গে একাসনে হরি-গুরুচাঁদকেও বসাব ।
একবার ভাবুন তো আপনাকে পশুর স্তর থেকে মানুষের স্তরে কি ঐ দেবী-দেবতারা এনেছে ? নাকি হরি-গুরুচাঁদ ,যোগেন মন্ডল, আম্বেদকর ইত্যাদি মূলনিবাসী মহামনবেরা এনেছেন ? যারা ৩৩(তেতত্রিশ) কোটি দেব-দেবীর সৃষ্টি করেছে, কেন আমরা তাদের উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করে রাখব ? আপনার আমার মনুষ্যবোধ আর কবে জেগে উঠবে বলুন তো ?
 
আসলে আমরা আমাদের আত্ম পরিচয়টাকেই  ভুলেগেছি । কিন্তু কেন ? গুরুচাঁদ ঠাকুর তো আমাদের আত্ম পরিচয় মনে করিয়ে দিয়ে শক্তিতে জ্বলে ওঠার কথা আগেই বলেছেন । সেটা হচ্ছে-               আত্ম পরিচয়,        মনে নাহি হায় ।
                             তাই এ দুর্গতি ভালে
                     পূর্ব বিবরণ        করতে  স্মরণ,
                            শক্তিতে ওঠরে জ্বলে ।।
আমরা একথাগুলোকে শুধু কথার কথা বলেই মনে করেছি । কিন্তু তার পরিনতি ! পরিনিতি হচ্ছে এটা- 'যে জাতি বা সম্প্রদায়ের লোকেরা তার নিজের জাতি বা সম্প্রদায়ের লোকদের যোগ্য সম্মান দিয়ে মর্যাদার আসনে বসাতে সক্ষম নয়, তারা কখনও অন্য জাতির বা সমাজের মানুষের কাছে থেকে যোগ্য সম্মান পেতেও পারেনা । যে মানব গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের লোকেরা তার নিজস্ব ধর্ম এবং সমাজ সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে লজ্জাবোধ করে, সেই মানবগোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের লোকেরা ধীরে ধীরে আত্ম মর্যাদাহীন হয়ে শেষ পর্যন্ত ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যায় ।'

আমরা কি উপরের কথাগুলির পর্যায়ে পৌঁছে যাইনি ? কেন আমরা এই পর্যায়ে পৌঁছে গেলাম বা কে বা কারা আমাদের এই পর্যায়ে নিয়ে গেল ? এর জন্য আমি বা আপনি ব্যক্তিগত ভাবে নিজের দোষকে অস্বীকার করতে পারি কি ? যদি না পারি, তাহলে এখনও কি আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর মত শেষ বিন্দুটি বেঁচে আছে ? অবশ্যই আছে । এটা আমি অন্তত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি । তবে  সেটা কিভাবে ?

    দেখুন আমরা যদি ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা গ্রহন করি তবে সেই প্রতিজ্ঞার দৃঢ়তাকে অক্ষুন্ন রাখার রসদ পাওয়ার জন্য অন্য কোথাও ঘুরে বেড়ানোর দরকার নেই । সেই রসদ প্রত্যক্ষ এবং অপ্রত্যক্ষ ভাবে বিরাজ করছে মতুয়া আকর গ্রন্থ হরিলীলামৃত ও গুরুচাঁদ চরিতের মধ্যে । তবে হ্যাঁ এই রসদ খুঁজতে হ'লে কিন্তু বিজ্ঞান মনষ্ক যুক্তি ও বিশ্লেষণ মূলক ভাবনার কষ্টিপাথরে বিচার করে অগ্রসর হ'তে হবে । আর সেটা না হলে মতুয়াদের হারিয়ে যাওয়ার জন্য আর কিছু বাকী থাকবেনা ।
ফিরে আসি আবার সেই official/Unofficial এর কথায় ।
   তাহলে আমরা কিভাবে মতুয়া ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হ'ব সরকারিভাবে ? এবিষয়ে আমার মনে হয় আমাদের আকর গ্রন্থটি থেকে এর উপায় খুঁজতে হবে । কি উপায় আছে ?
গুরুচাঁদ ঠাকুর তো বলেছেন- 
                    যার দল নাই        তার বল নাই । 
                           ভীন্ন দল কেউ করো না  
  পার্লামেন্ট হছে ক্ষমতার আগার । সেখানে দেশ শাসনের ও ক্ষমতা প্রদানের সব ব্যবস্থা আছে । কিন্তু সেই ক্ষমতাকে অর্জন করতে হলে নিজেদেরকে এক ছত্রছায়ায় এসে সত্য ও নিষ্ঠাবান  নেতৃত্বের নির্মান করতে হবে । সংঘবদ্ধ শক্তি কিন্ত সমস্ত অধিকারকে আদায় করে নিতে পারে । এই শক্তিকে শক্ত করতে হলে কিন্তু আমাদের প্রথমে মতুয়া আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে শক্তি গঠনের জন্য সামিল হতে হবে । আর এই সামিল হওয়ার জন্য প্রথমেই আমাদের উদ্দেশ্যকে নির্ধারিত করতে হবে । কারণ উদ্দেশ্য নির্ধারিত না হলে শ্রতের সঙ্গে ভেসে যাওয়ার জন্য কোন সময় লাগবেনা । উদ্দেশ্যের প্রতি সংকল্পবদ্ধ হয়েই কিন্তু প্রচলিত প্রথার প্রতিকুলেই আপনাকে কঠোর সংগ্রাম করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে
আর এই উদ্দেশের প্রতি সংকল্পবদ্ধ হওয়ার জন্য সংঘ শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য তিনটি জিনিস আপনাকে দিতে হবে । সেটা হচ্ছে-
                                        (১)তন
                                        (২) মন
                                  এবং (৩) ধন 
তন অর্থাৎ শরীর । অর্থাৎ শারীরিক ভাবে আপনার সমর্থন প্রত্যক্ষ হওয়া দরকার । কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অগ্রসর হতে হবে ।
    কিন্তু সেই কাঁধে কাঁধ মেলানোর জন্য কিন্তু 'মন' দরকার । মানসিকভাবে আপনাকে প্রস্তুত হতে হবে তা না হলে কাঁধে কাঁধ কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হবেনা ।
    এই কাঁধে কাঁধকে দীর্ঘস্থায়ী  করতে হলে 'ধন'-এর অবশ্যই দরকার । কারণ ধন বিনা বাকী সব কিছু কিন্তু নির্ধনতায় পরিনত হতে সময় লাগবে না ।

এই সংঘবদ্ধ শক্তিকে বিস্তার দানের জন্য অত্যাবশ্যক হচ্ছে -প্রচার বাহিনীর নির্মান করা এই প্রচার বাহিনী কিন্তু  প্রতিস্তরেই দরকার । যেমনঃ- প্রচারক, লেখক, কবি-সাহিত্যিক, cultural সংক্রান্ত ইত্যাদি । কারণ একটা কথা আছে যে, কোন বিচার ধারা  যদি প্রবাহিত না হয় তাহলে তার মৃত্যু অনিবার্য । এই সঙ্ঘশক্তির প্রচার মূলক বিচার ধার প্রবাহিত নদীর শ্রতের মত বহমান হওয়া দরকার । বহমান জল কখন ও পচে না । বদ্ধ জল পচে যায় ।

    এর সঙ্গে একটা কথা মনে রাখা দরকার- কেউ যদি মনে করেন যে তিনি আমাদের পরিচয় বা নাম নিয়ে আমাদের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে অন্যের ঘরে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত হবেন, আর মনে করেন যে আমাদের  ঘরের সুবিধা দেবেন; সেটা কিন্তু ইতিহাস বলেনা । কারণ যে আপনাকে তার ঘরে গ্রহন করবে, আপনাকে কিন্তু তার ঈশারায় চলতে হবে । নামে তিনি আমাদের হতে পারেন কাম কিন্তু কখনও আমাদের জন্য করতে পারবেন না বা তাকে করতে দেবে না । উল্টা  শত্রুরা তাকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধেই কাজ করিয়ে নেবে ।

                      এবার আসি প্রচার বাহিনীর মশি শক্তি সম্পর্কেঃ-
    একটা প্রবাদ আছে যে, অসির থেকে মশি বড় । আবার সৈনিকের বন্দুক থেকেও কলমের জোর অনেক বেশী অসি অর্থাৎ হাতিয়ার । এই হাতিয়ার দিয়ে আপনি এক বা বহু সংখ্যক লোককে মারতে পারেন বা ভয় দেখিয়ে আপনার পক্ষে আসতে বাধ্য করতে পারেন । তবে জোর করে কিন্তু খুব বেশী দিন আপনি এই অসির ব্যবহার করতে পারবেন না ।
    কিন্তু মশি অর্থাৎ কলমের কালি । এই কালি এক-দু'জন নয় বংশ পরম্পরায় যুগের পর যুগ মানুষকে আপনার  বিচার ধারায় অনুপ্রাণিত করে রাখতে পারবেন । উদাহরণ হিসাবে আমরা ফিরে যেতে পারি বৈদিক যুগের শুরুতে । সেখানে বৈদিকবাদীরা মানুষকে তাদের বশবর্তী করে রাখার জন্য জীবনে বেঁচে থাকা ও প্রগতির জন্য যে প্রধান তিনটি উপাদান -
                   শিক্ষার অধিকার
                   সম্পত্তির অধিকার  
             এবং অস্ত্রের অধিকার কে হরণ করেছিল।
শিক্ষা বিনা মানুষের প্রগতি সম্ভব নয় । জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা অনিবার্য । শত্রু মিত্রের পরিচয় বোঝার জন্য জ্ঞানার্জন আবশ্যক । তাই বৈদিকেরা সর্ব প্রথমে জ্ঞানার্জনের অধিকারকে হরণ করে । তারা কিন্তু এই অধিকারকে হরণ করেই থেমে থাকেনি । কারণ তারা জানত কোন কিছুই চিরস্থায়ী ভাবে হরণ করে রাখা যায় না । তাই তারা উপায় বের করল গোলাম বানানোর ।  কোন গোলাম ? মানষিক গোলাম । কিভাবে বানাল ? মানষিক গোলাম বানানোর জন্য তারা সর্বপ্রথমে পূর্ব বৌদ্ধ কালের পুরানাদিকে নষ্ট করে নিজেদের মত করে লিখতে শুরু করে ঐ একই নাম দিয়ে । অর্থাৎ এমন হোল -সন্তান যে মা-বাবার কোলে বেড়ে উঠছে তার পিতা কিন্তু অন্যে । অর্থাৎ নামে সন্তান আমার হলেও আমাকেই ধ্বংস করার জন্য বেড়ে উঠছে । যার জন্য সমস্ত বৈদিকবাদী গ্রন্থে আমরা দেখতে পাই মূলনিবাসী রাজা-মহারাজাদেরকে আমাদের কাছে আমাদের শত্রুরূপে তুলে ধরেছে । তাদেরকে রাক্ষস, দস্যু, দানব ইত্যাদি নাম দিয়েছে । আর আমরা আজও শিক্ষার অধিকার অর্জন করেও জ্ঞানের আলো জ্বালতে পারলাম না । যার জন্য বৈদিকতার জ্বালে ফেঁসে আছি শত্রুকেই আপন মিত্র ভেবে আলিঙ্গন করছি । আমাদের সর্বনাশের জন্য পিপিলিকার মত পাখনা মেলে বৈদিকতার আগুনে ঝাঁপ দিচ্ছি ।
     আমাদের বর্তমান মতুয়া 'মশি' চালনা কারিদের বেশীরভাগই ঐ আগুনে ঝাপ দেওয়ার কাজ করছি । আর নিজেকে সরার উপরে তুলে ধরার জন্য সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছি । তার জন্য আমরা নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারলেই মনে হয় ধন্য হই । কিন্তু কেন ?
    আমরা প্রায় সকলেই কম বেশী জানি যে, হরিলীলামৃত ছাপাতে গিয়ে সেই সময় (১৯১৬ সালে) কুড়ি(২০) টাকা ঘুষ দিতে হয়েছিল । বই ছাপানোর জন্য ঘুষ কেন ? কারণ, বৈদিকবাদীরা জানত যে, কোন বই-ই কোন জাতিকে জাগানোর একমাত্র হাতিয়ার হ'তে পারে । তাই তারা বই ছাপাতে রাজি না হলে ঘুষ পর্যন্ত দিতে হয় তাতেই কিন্তু সব সমাধা হয়নি । সেখানে ঐ বইকে তাদের মত করেই পরিবর্তন করতে হয়েছে বৈদিকতার বুনো জল ঢোকাতে হয়েছে হরিলীলামৃতে । বৈদকতার বেড়া দিয়ে অবৈদিকতাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে ।
     এটাতেও থামেনি বৈদিকবাদীরা । তারা মূল গ্রন্থকে কিন্তু আর ফেরতও দেয়নি । কারণ, বৈদিকবাদীরা ভাল করেই জান্ত যে, মূল গ্রন্থ ফেরত দিলে পরবর্তিতে ছাপানো গ্রন্থের মধ্যে যে বুনো জল ঢোকানো হয়েছে সেটা কিন্তু বেশী দিন ধরে রাখা যাবেনা । তাই বৈদিকবাদীরা ছাপানো গ্রন্থকে এমন ভাবে মিলাবট করল যে, হরিচাঁদ ঠাকুর অবৈদিকবাদী নন, তিনি বৈদিকবাদীদেরই একজন অবতার । বৈদিকতার প্রচারক । যার ফলে বৈদিকবাদীদের ব্যাবস্থা সুদীর্ঘ হতে পারবে । তাই তাদের সেই তীক্ষ্ণ জ্বালে আজও আমাদের মশি চালনাকারিরা ফেঁসে থেকে হরিচাঁদকে  অবতার -ভগবান-মৈথিলি ব্রাহ্মণ ইত্যাদি বানানোর খেলায় মেতে জাতিকে অধপতিত করে নিজের মুন্ডিটাকে তুলে ধরার কাজ করা হচ্ছে । আর যার পরিনতিতে আজ মতুয়া ধর্ম শুধু নাম-গান আর চাল-কলা খাওয়ার মধ্যেই বেঁচে আছে । যুগান্তকারী ধর্মীয়, সামাজিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনবাদী ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারলনা । কারণ, সেটা হ'তে গেলে আগে প্রয়োজন নিজের মনের কলুষতা থেকে মুক্ত হওয়া । আমরা যে বৈদিকতার মাদক পান করেছি, সেই নেশার ঘোরে আজও মেতে আছি । যার জন্য আমাদের চোখে সব কিছুই রঙিন মনে হয় ।

      তবে হ্যাঁ, খুব সামান্য হলেও বেশ কিছু মশি চালকের মধ্যে রাজহাঁস হয়ে ওঠার মশালা দেখতে পাচ্ছি । তাঁদের লেখায় ফুঁটে উঠছে যুক্তি সংগত গবেষণা মূলক ভাবনা চিন্তার স্ফুরুন । যেটা মতুয়া ধর্মকে প্রগতি দেওয়ার জন্য এবং মতুয়াদের সঠিক দিশা দেখানোর ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা গ্রহন করছে । সেই লেখক ও তাঁদের লেখা বইগুলো যেটা অন্তত আমার বোধ বুদ্ধিতে এখনও পর্যন্ত অসাধারাণ বলে মনে হয়েছে । আমি যে বইগুলোর কথা বলতে যাচ্ছি, সেটা আপনারাও হয়তঃ কিছুটা জানেন । তবুও সেই নাম গুলোকে আমি উল্লেখ না করে পারছিনা । সেগুলো নীচে দেওয়া হ'লঃ-
লেখক ডাঃ মণিন্দ্রনাথ বিশ্বাস-এর লেখা
(১) হরিচাঁদ তত্ত্বামৃত(কাব্য)
(২)গুরচাঁদের প্রত্যক্ষ শিক্ষা
(৩) আমার আমি( কবিতা)
(৪) প্রশ্নোত্তরে মতুয়া দর্শন
লেখক মনি মোহন বৈরাগী-এর লেখা
(১) অস্পৃশ্য ও অনগ্রসর জাতির মুক্তি আন্দোলনে হরি-গুরুচাঁদ ঠাকুর ও মতুয়া ধর্ম 
(২) অনালোকিত অতীত ইতিহাসে ভারতীয় মূলনিবাসীরা ও তাদের ধর্ম ভাবনা
(৩) বৌদ্ধ ও মতুয়া ধর্মের আলোয় অবৈদিক ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কৃতি
(৪) এক অভিন্ন অবৈদিক সনাতনী দর্শন বৌদ্ধ ও মতুয়া দর্শন
লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারী-এর উপন্যাস -মতুয়া এক মুক্তি সেনা
লেখক সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস-এর লেখা- মতুয়াধর্ম এক ধর্ম বিপ্লব   
এছাড়া দু'টি সংকলিত বই হচ্ছে-
(১) শ্রী সন্তোষ কুমার বারুই (সংকলক ও সম্পাদক)-
ঠাকুর শ্রী শ্রী হরিচাঁদ মানব পুরুষঃ অধ্যাত্ম পুরুষ
(২) কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর সম্পাদিত-শ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর ও মতুয়া ধর্ম আন্দোলন
এই সংকলন দু'টিতে কিছু কিছু লেখা গতানুগতিকতার প্রতিকুলে গিয়ে কঠিন বাস্তবকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে । আর মতুয়া দর্পন পত্রিকার ৫৬ সংখ্যায় লেখক কালিদাস বারুরীর লেখা- 'মতুয়া জীবন কেমন হওয়া দরকার' লেখাটি সমাজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ভিষণ মুল্যবান বলে আমার মনে হয়েছে । এছাড়াও কিছু কিছু লেখা -বিভিন্ন পত্রিকায় উঠে আসছে যে গুলো পরিবর্তন মূলক এবং সময় উপযোগী ।