Pages

Sunday, 10 June 2018

তাই শুনে কেউ বদ্যি ডাকে কেউ বা হাঁকে পুলিশ


তাই শুনে কেউ বদ্যি ডাকে কেউ বা হাঁকে পুলিশ 
কেউবা বলে কামড়ে দেবে সাবধানেতে তুলিস ……    

 
ছোটবেলা থেকে শুনে আসছিহেড অফিসের বড়বাবুএরকমই মাথার ব্যারাম হঠাহঠাৎ  তিনি এমন কান্ড বাঁধিয়ে বসেন যা সামলাতে দেশ শুদ্ধ মানুষের হিমশিম খেতে হয় তারপর দেখা যায় সব কিছু ভোঁভা সব ফেক, সব ঝুটসবটাই জুমলাবাজী  …  




নাগপুরে আরএসএস হেডকোয়ার্টারে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখার্জীর ভাষণের পোস্টমর্টেম শেষ হতে না হতেই একটি মাওবাদী চিটির দৌলতে (পুলিশের দাবী অনুসারে) দেশের বড়বাবু নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদিকে নিয়ে তুমুল হৈচৈ পড়ে গেল মহারাষ্ট্রের পুনা পুলিশের দাবী করেন যে, ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৭ এবং ১লা জানুয়ারী ২০১৮ তে অনুষ্ঠিত ভীমা কোরেগাঁওএর ২০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যে সমাবেশ হয়েছিল তার আয়োজক সংস্থাএলগার পরিষদেরসাথে যারা যুক্ত তাঁদের অনেকের সাথেই সিপিআই (মাওবাদী) এর সম্পর্ক রয়েছে মঙ্গলবার ভোররাতে মহারাষ্ট্র ক্রাইম ব্রাঞ্চ মুম্বাই, নাগপুর এবং দিল্লীতে অভিযান চালিয়ে দলিত কর্মকর্তা সুধীর ধাওয়ালে, আইনজীবী সুরেন্দ্র গাডলিং,  মহেশ রাউত, সোমা সেন এবং রোনা উইলসনকে গ্রেপ্তার করেন এবং দাবী করেন যে এই পাঁচজনের বাড়িতে তল্লাশি চলাকালীন দিল্লীর রোনা উইলসনের বাড়ি থেকে এই ভয়ংকর চিঠিটি উদ্ধার করেন যা দেশের বড়বাবু নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদিকে হত্যা করার পরিকল্পনা রয়েছে। 

পুলিশের উকিল হিসেবে উজ্জ্বলা পাওয়ার কোর্টকে জানান যে এই চিঠিতে “another Rajiv Gandhi type incident" to end the Modi regime at the Centre  এই কথাগুলি উল্লেখ আছে এবং এই হত্যাকান্ডের জন্য ৮কোটি টাকা, এম-৪ রাইফেল এবং ৪লাখ রাউন্ড গুলির প্রয়োজন হবে বলে জানানো হয়েছে। মিসেস উজ্জলা পাওয়ার আরো জানান যে   ১৮/০৪/২০১৭ সালের এই চিঠির লেখক কমরেড “আর” কমরেড প্রকাশকে লিখেছেন,”"The higher Committee has appreciated the endearing efforts of all urban comrades for the specific tasks given to them... there is a lot of ground to be covered. Comrade Mangalu and Deepu have been coordinating the Koregaon programme (for) last two months with Comrade Sudhir.  মিসেস উজ্জলা পাওয়ার জানান যে কি ভাবে ভীমা কোরেগাঁওয়ের আন্দোলনে অর্থ জোগাড় হবে তারও উল্লেখ রয়েছে এই চিঠিতে। "comrade Sudhir" for Koregaon Bhima "task" and "Comrade Shoma and Surendra" were authorised to provide funds for future programmes.


এই চিঠির বার্তা দেখে অনেকেই আঁতকে উঠতে পারেন। পাড়ায় শোরগোল ফেলে দিতে পারেন। টিভিতে আলোচনার ঝড় বইয়ে দিতে পারেন। এলগার পরিষদের সভাপতি প্রকাশ আম্বেদকরকেও মাওবাদীদের দোসর হিসেবে আখ্যা দিতে পারেননিরবাচনের খরচ হিসেবে অরুন্ধতী রায় টাকা দিয়েছিলেন বলে গুজরাটের এমএলএ জিগনেশ মেবানীকেও মাওবাদী সাঁজাতে পারেন এবং দলিত আন্দোলনের নামে দেশে মাওবাদী আন্দোলন চালানো হচ্ছে বলে সমগ্র ভারতের আম্বেদকরবাদী আন্দোলনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি কারা হোক বলে প্রচার শুরু করতে পারেন। জনান্তিকে বলে রাখি এই চিঠির (ফেক চিঠি বলে মনে করি) দৌলতে এইতিমধ্যেই বড়বাবুর পোষা মিডিয়া ভীমরুলের মত গুঞ্জন শুরু করে দিয়েছে। বিজেপির হাইফাই উন্নত ডিজিটাল জগত থেকে দলিত আন্দোলনের উপর কামান দাগানো শুরু হয়েছে। ইত্যবসরে মোহন ভগবত এবং প্রনব মুখার্জির যুগলবন্দীর আওয়াজ  অনেকটা চাঁপা পড়ে গিয়ে হেড অফিসের বড়বাবুর  আঁতকে ওঠার আর্তনাদ অনেকটাই আবার প্রচারের আলোয় ফিরে এসেছে।


চিঠিতো বাহানা, দলিত আসল নিশানা
রোহিত ভেমুলার প্রাতিষ্ঠানিক হত্যাকান্ডের পর আমরা দেখেছিলাম মানিয়া স্মৃতি ইরানী হায়দরাবাদ পুলিশের রিপোর্ট হিসেবে একটি কাগজ দেখিয়ে পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষে দাবী করেছিলেন যে রোহিতের সঙ্গী আন্দোলনকারীরা এতই ভয়ংকর ছিল যে পরের দিন সকাল পর্যন্ত পুলিশকে তাঁর দেহের কাছে ঘেষতে দেয়নি। রোহিত আফজলগুরুর সমর্থনে মিছিলে যোগ দিয়েছিল তাই সে পাকিস্তানের সমর্থক এবং দেশদ্রোহী। পরে হায়দরাবাদের পুলিশের চিঠি প্রকাশ্যে আসে। জানতে পারা যায় যে স্মৃতি ইরানী একটি জাল চিঠি দেখিয়ে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের মর্যাদা লঙ্ঘন করেছেন এবং স্বাধিকার ভঙ্গ করেছেন। রোহিতের এই প্রাতিষ্ঠানিক হত্যার পরেই গোটা ভারত জুড়ে আম্বেদকরবাদী আন্দোলন সর্বব্যাপী হয়ে  ওঠে। পার্লামেন্টে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনায় নাকানিচোবানি খেতে হয় বিজেপিকে। ছাত্রসংসদগুলিতে প্রবল শক্তি নিয়ে উঠে আসে ASA, SIO, BAPSAর মত ছাত্র সংগঠন এক বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ দখল করার মত জায়গায় পৌঁছে যায় তাঁরা আরএসএস মদতপুষ্ট ABVP কে প্রাজিত করে SIO এবং ASA মিলিত ভাবে রোহিত ভেমুলার হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ দখল করে নেয়


অন্য দিকে গুজরাটের উনাতে চর্মকারদের উপর গোরক্ষকদের নির্মম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সারাদেশ গর্জে ওঠে এই নির্যাতনের প্রভাব ইউনাইটেড নেশন পর্যন্ত পৌঁছে যায় একটি বিশেষ অধিবেশন ডেকে ভারতে দলিতদের উপর এই নির্যাতনকে ধিক্কার জানানো হয় ওনার আন্দোলনের ধাক্কায় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয় দলিত-মুসলিম এবং বুদ্ধিজীবীদের সম্মিলিত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে উঠে আসেন জিগনেশ মেবানীর মত তরুণ নেতা জিনি ২০১৭ সালের গুজরাটের বিধান সভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে জয়লাভ করেন।                               


১৯১৪ সালে অ্যাডভোকেট চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে প্রতিষ্ঠিত হয় ভীম আর্মি। ৩০০ এর বেশি বিদ্যালয় গঠন করে শুরু হয় পঠনপাঠন। এই পঠনপাঠনের সাথে সাথে চলতে থাকে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মশালা। ভীম আর্মির সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ফেলেই দলিত-বহুজন মানুষেরা দুর্বার গতিতে বাবা সাহেব আম্বেদকরের চিন্তাধারাকে বাস্তবায়িত করার জন্য বিভিন্ন গ্রামে তাঁর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন এবং তাঁর দেখানো পথেই স্বধর্মে প্রত্যাবর্তন শুরু করেন।


এতেই প্রমাদ গুনতে শুরু করে ব্রাহ্মন্যবাদীরা। তাঁর চায় শূদ্র এবং অচ্ছুৎ চিরকালই তাদের পদানত থাকবে। লাথি ঝাঁটা খেয়েও তাঁরা চতুর্বর্ণ ত্যাগ করবে না।


শুরু হয় ষড়যন্ত্র।  পটভূমি রানাপ্রতাপের জন্মদিন পালন। জন্মদিন পালনের অছিলায় দলিত গ্রামে আক্রমণ। ঘরবাড়ি ছারখার করে দেওয়া। মানুষ হত্যা করা এবং তাঁর প্রতিবাদ করার জন্য চন্দ্রশেখর আজাদের বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইনে কেস এবং তাঁকে জেলে ঢুকিয়ে দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্র।

ভীমা কোরেগাঁওকে নিয়ে ভারতের নিও পেশওয়া বড়বাবুদের আঁতকে উঠবার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। এর ইতিহাসটাই আঁতকে দেবার মত।  মাত্র ৫০০ মাহার সৈন্যের কাছে ২৫০০০ পেশোয়া সৈন্যের পরাজয় সূচীত হয়েছিল এখানে। অসম সেই বীরত্বের শৌর্যস্তভ রয়েছে ভীমা কোরেগাঁওয়ে ।  ভীমা কোরেগাঁও ভারতের সমস্ত দলিত-বহুজনের কাছে বীরত্ব এবং শৌর্যের প্রতীক কিন্তু নিও-পেশওয়াদের কাছে পরাজয়ের শ্মশান ভূমি।

এখানে বলে রাখি যে ভীমা কোরেগাঁও এর এই শৌর্য দিবস পালন একটি রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী। মহারাষ্ট্র সরকারই প্রতিবছর ১লা জানুয়ারী এই শৌর্য দিবস পালন করে। কিন্তু বছর আচমকা সরকার ৩১শে ডিসেম্বর এই অনুষ্ঠান সেরে ফেলে। যদিও মূল সংগঠকদের পক্ষ থেকে দিন আগেই যৌথ ভাবে এই অনুষ্ঠান পালন করার ঘোষণা করা হয়েছিল !! প্রকাশ আম্বেদকর জানাচ্ছেন এই ২০০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য তিনি "ব্রাহ্মণ সভা" এবং অন্যান্য মারাঠা সংগঠনগুলিকেও আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। তারা এই অনুষ্ঠান পালনের সম্মতিও দিয়ে ছিলেন এবং জানিয়েছিলেন যে আগামী বছর থেকে তাঁরা মিলিত ভাবে এই শৌর্য দিবস পালন করবেন। কিন্তু মহারাষ্ট্র সরকার আগের দিনই এই দিবস পালন করায় সন্দেহ তৈরি হয়!

১লা জানুয়ারী একেবারে অতর্কিতে সন্ত্রাসবাদী কায়দায় এই শৌর্য দিবসের উপর আক্রমণ করে "ব্রাহ্মণ সভা" এবং আরএসএস। একেবারে কাপুরুষের মত কিছু গাড়ী ভাঙচুর করে। আগুন জ্বালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং নিরীহ, নিরস্ত্র নারীপুরুষের উপরে লাঠি, রড, পাথর চালিয়ে রক্তাক্ত করে দেয়। দুজন বহুজন সাথী ব্রাহ্মন্যবাদীদের আক্রমণে প্রাণ হারান। সুশিক্ষিত বিভিএফ, ভীম আর্মি এবং সমতা সৈনিক দল পাল্টা প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিলেই এই গর্তজীবীরা লেজ গুটিয়ে হাম্বা হাম্বা করে আনাচ কানাচ ধরে আবার গর্তে ঢুকে যায়। পুলিশ প্রশাসন হামলা কারীদের বিরুদ্ধে কোন আইনি পদক্ষেপ না নিয়ে প্রতিরোধকারীদের আরেস্ট করে এবং মামলা সাজায়।
দেশ জুড়ে ঝড় ওঠে। বহিন মায়াবতী শৌর্য দিবস অনুষ্ঠানকে নৈতিক সমর্থন দিয়ে এই হামলাকে বিজেপি এবং ব্রাহ্মণবাদীদের সংগঠিত হামলা বলে তীব্র কটাক্ষ করেন সমস্ত বহুজন সংগঠন ভীমা কোরেগাঁও এর পাশে এসে দাঁড়ায়। এই ঘটনায় প্রতক্ষ্য সংযোগ থাকার জন্য মিলিন্দ একবোটে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির গুরুজী সাম্বাজী ভীড়ের বিরুদ্ধে   SC ST (Prevention of Atrocities) Act. 1989  অনুসারে কেস হয়। এই কেসে মিলন্দ একবোটে এরেস্ট হলেও এখনো সাম্বাজী ভিড়েকে এরেস্ট করা হয় নি।
প্রতিবাদে  সমস্ত বহুজন শক্তি একত্রিত হয়ে মহারাষ্ট্রে বন্ধ ঘোষণা করা। ভীমা কোরেগাঁওয়ের সমারোহের এক দিন পরে বহুজন সমাজের সম্মিলিত শৌর্যে মহারাষ্ট্র অচল হয়ে যায়। বজ্রকন্ঠে আওয়াজ ওঠে “জয় ভীম, জয় ভারত,  " যো হামসে টকরায়েগা, চুরচুর হো যায়ে গা"


রক্ষা কবচ ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রঃ     
এসসি এসটিদের প্রতি রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রে গোপন অভিসন্ধি বেনাকাব হয়ে পড়ে ২০শে মার্চ। এই সময়ে সুপ্রিম কোর্টের SLP (Crl.) No. 5661 of 2017, Subhash Kashinath Mahajan v. State of Maharashtra. Vide its order dated 20.11.2017, একটি ৮৯ পাতার নির্দেশিকা SC ST (Prevention of Atrocities) Act. 1989 কে দুর্বল এবং কার্যত অকেজো করে দেয়। যে সময়ে দেশে এসসি এসটিদের উপর তথাকথিত উচ্চবর্ণদের নির্যাতন সমস্ত রেকর্ড ছাড়িয়ে ৭৪৬% পৌঁছে যায় ঠিক সেই সময় এই আইনকে আরো কঠোর ভাবে প্রয়োগ না করে তাকে কার্যত অকেজো করে দেওয়ার নির্দেশিকার পেছনে এক গভীর ষড়যন্ত্র অনুভব করে দলিত বহুজন। তাঁরা বুঝতে পারে যে তাদের রক্ষাকবচের এই লঘুকরণ আসলে তাদেরকে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করার এবং তাদেরকে আবার গোলামীর শৃঙ্খলে আবদ্ধ করার এক ঘোরতর ষড়যন্ত্র। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশিকার ফলে আদিবাসী মূলনিবাসী বহুজন সমাজের মধ্যে প্রচণ্ড আক্রোশের সৃষ্টি হয়। ২রা এপ্রিল ২০১৮ আচমকাই ভারত বন্ধের ডাক দেয় দলিত-বহুজন মানুষ। জাদব, প্যাটেল, জাঠ, মুসলিম সমাজও এই বন্ধকে সমর্থন করে ১৮টি রাজ্যকে অচল করে দেয়। বন্ধের মোকাবিলায় ঘাতকদের লেলিয়ে দেয় বিজেপি সরকার। এই ঘাতকেরা ১১জন বন্ধকর্মীকে গুলি করে হত্যা করে।  এদের মধ্যে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি কর্মকর্তা রাজা সিং চৌহানকে পিস্তল হাতে বন্ধের মিছিলের উপর গুলি চালাতে দেখা যায়। তার গুলিতে কয়েকজন আন্দোলনকারীকে প্রাণ হারান।  পরিকল্পিত ভাবেই শাসক দল শান্তিপূর্ণ দলিত-বহুজনের  আন্দোলনকে হিংস্র করে তোলে। দলিত আন্দোলনের হাজার হাজার কর্মীকে গ্রেপ্তার করলেও রাজ্যের বিজেপি সরকার এই খুনিদের গ্রেপ্তার করে নি, বরং এই সংগঠিত বন্ধের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মন্যবাদীরা  ৮ই এপ্রিল ২০১৮ আর একটি পাল্টা বন্ধের ডাক দিয়ে দলিত-বহুজন সমাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয়। সচেতন ভারতবাসী ব্রাহ্মন্যবাদীদের এই বন্ধে সাড়া না দেওয়ায় তাঁরা বিফল হয়।


অন্যদিকে দলিত বহুজন আক্রোশ বাড়তেই থাকে। প্রকাশ আম্বেদকরের নেতৃত্বে ভীড়ে গুরুজীকে গ্রেপ্তার করার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। জিগনেশের নেতৃত্বে যন্তরমন্তরে আয়োজিত হয় “দলিত যুবা হুঙ্কার” র‍্যালি। ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের মুক্তির দাবীতে রাজ্যে রাজ্যে ভীম গর্জন শুরু হয়।


এর মধ্যেই এসে পড়ে কিছু উপ নির্বাচন। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পাঞ্জাবের উপনির্বাচনে ধরাশায়ী হয়ে যায় বিজেপি। কর্ণাটকের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে উঠে এলেও কংগ্রেস, বিএসপি এবং জেডিইউর একতার কাছে হার মানতে হয়। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েও ইয়াদুরাপ্পা ফ্লোর টেস্টের আগেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিরোধী জোটের একতা দেখে সমস্ত ঘুটি উল্টে যায় বিজেপির। যে ভাবে বহিন মায়াবতীর নেতৃত্ব এবং বাবাসাহেবের চিন্তাধারার উপর বিরোধী দলগুলির সমর্থন বাড়ছে এবং সমস্ত দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে তাতে প্রমাদ গুনতে শুরু করেছে বিজেপির চিন্তন শিবির।  আর এই চিন্তন, মন্থন এবং বিষাক্তকরণেরই একটি মহা গুজব এই মাওবাদী চিঠি। নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদিকে হত্যা করার গল্প। মানুষের আবেগকে পুঁজি করে প্রচারের আলোয় ফিরে আসা। সাথে সাথে দলিত-বহুজনের আন্দোলনকে মাওবাদী আন্দোলনের সাথে জুড়ে দিয়ে সারা দেশব্যাপী দলিত নেতাদের গ্রেপ্তার করা এবং তাদের অভাবে জনগণকে প্রভাবিত করে নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়া !!!


হ্যা, জুমলাবাজীতে বড়বাবু  নিজেকে বেশ দড়ই মনে করেন। তার হাসি, তার কান্না, তার নাটুকে ডায়লগ বেশ প্রভাব ফেলেছিল ভারতের রাজনীতিতে। কিন্তু অনবরত জুমলাবাজিতে মানুষ বুঝে গেছে তিনি আসলে গল্পের সেই রাখাল যে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য বাঘ বাঘ বলে অকারণ চেঁচায়। তাই “ওরা আমাকে মেরে ফেলবে” বা "ওরা আমাকে বাঁচতে দেবেনা" এই গল্পে আর ভবি ভুলবে না। অসংখ্য টিভি চ্যানেলে পোষা তোষামোদ রেখে রাতদিন মরা মরা জপলেও এই গল্প আর কেউ বিশ্বাস করবে না।  বরং ২০১৯ সালে একটি স্বচ্ছ আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে মানুষ বুঝিয়ে দেবে “চা বা পকোড়া” প্রজেক্টে জুমলাবাজি হতে পারে, দেশের কোন উন্নতি হয় না।                

3 comments:

  1. অর্ণব, সুধীর এবং সম্বিৎরা ক্যানেস্তারা পিটিয়ে চেঁচাতে শুরু করেছে যে দলিত আন্দোলনের নামে মাওবাদীরা দেশ জুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। কালবুর্গী এবং গৌরী লঙ্কেশকে হত্যা করার আগে এই ভাবেই তাদেরকে মাওবাদী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. এসব মিথ্যা মামলা-হামলা করে আন্দোলনে কিছুটা বিঘ্ন ঘটানো যায়, জনরোষ থামানো যায় না!

      আর মাওবাদী হলেই তাকে বিনা বিচারে হত্যা করা যায়, এই ধারণাটি ফ্যাসিবাদী। ধিক্কার জানাই।

      Delete
  2. জালিয়াত বিজেপি বহুবার জাল চিঠি ছড়িয়ে মানুষকে হয়রানী করেছে। আজ পুনে কোর্টে প্রমান হয়ে গেল মোদিকে হত্যা করার যে চিঠি পুনে পুলিশ পেশ করেছিল সেটিও জাল চিঠি ।

    ReplyDelete